অভিমন্যু ফয়েজী
কতাখান্ কিন্তু সইত্য। আমার বিচ্ছু ভাতিজা খইল্যাই এই বিষয়ে আমার মাতাত চিন্তাডা ঢুকাইলো। দ্যাখলাম, নুচ কাক্কুর ঘরের ভিত্রে বিভীষন আছে যেই বিভীষন সইত্যের লাইগ্যা লড়াই কইরতে হারে। সাব্বাশ জননী রুমিন ফারহানা। এক্কেরে খাইয়া দিছুইন কাক্কুরে। আস্তে আস্তে খবর হইতে আছে কাক্কুর। আইজ জননী রুমিন ফারহানা এক্কেরে বুঝাইয়া দিছইন এক পেলেটের ভাত সব গুলা হমান না; এক পেলেটে কিছু শক্ত ভাতও থাহে; এইরাম ভাত নরম দাঁতে হজম হওন সোজা না; কাক্কুর চুরাশি সিক্কার দাঁতের অবস্থাও ভালো না; স্বাধীনতার আনন্দে কালা মুখে লাল হাসি ফুটাইয়া খালি টেলিভিশনে লম্বা চড়া বাতচিত করতে আছেন তাইন; দালাল সাংবাদিক মইত্যার লগে বেজির মতন মুখ কইরা তাইন সবতেরে কইলেন, সংস্কারের লাইগ্যা রেডী হইতে। কিসের সংস্কার তাইন করতে আছেন তাইর কোন মতামত নাই। কত্তগুলা কমিশন কইরা দিছেন রাজাকার কিসিমের লোকজন দিয়া যারার অনেকেই স্বাধীনতার ইতিহাসই মানেনা; আমরার বিচ্ছু খইল্যা কইলো, কমিশনগুলা নাকি সহজে রিপোর্ট দিতোনা; সময় বাড়বো তিন মাস থাইকা ছয় মাস, ছয় থাইক্কা নয়, তারপর আর না কই। যহন জমাত রেডী হইবো তহন ইলেকশন আইবো। আমার হ্যার কতা বিশ্বাস অয়।
রুমিন ফারহানা আম্মা কী সুন্দর কতা কইছুইন। সোজাসুজি তারারে সাবধান করছুইন এইটা কইয়া যে, শেখ হাসিনা এহনো বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রধানমন্ত্রী। সরাসরি কইছুইন শেখ হাসিনার কতা; তাইন টেলিফোনে কইছিলেন একজনরে, “চট করে ঢুকে যাবো, আমি এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী”; রুমিন আম্মা এইডার দিকে আঙ্গুল দিয়া কইলেন, “সি ওয়াজ নট রং অ্যাকোরডিং টু দিস কনস্টিটিউশন।”কাক্কুর খবরই আছে; আরে রুমিনওতো বারিষ্টার; আপনের সুবিধাবাদী সাবের চাইয়া কম যাননা এই জননী; তাইন মাইষের পালস্ আপনের সুবিধাবাদীর চাইয়া কম বুঝেনা। এইডা মাতাত রাইখেন। তাইন কাক্কুরে কইছুইন, সংবিধান মানলে কাক্কু অবৈধ। কারন নতুন পরধানমন্ত্রী না আওন তলক হাসিনাই পরধানমন্ত্রী থাকবেন— এইটাই সংবিধানের কতা। হেইটাত আত দিলে ওই আত পুইড়া যাইতে পারে। আম্মা আরো কইছুইন, ধর্মরে রাষ্ট্রের নীতিতে টাইন্না না আনতে। কী সোম্দর কতা; তয় আম্মারও মনে রাখল দরকার, কামখান কিন্তুক শুরু করছিলেন তাইনের দলের প্রতিষ্ঠাতাই। তয় মনে মনে কই, আম্মার মত নেতারা বিএনপি’র হাল ধরলে এই দলের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। অবইশ্য আমি একডা সম্ভাবনা দেখি যে, বিএনপি’র বড় বড় চাঁইগো ধমক খাইয়া রুমিন আম্মা তাইনের কতা ফিরাইয়া লইতে হারেন; বঙ্গদ্যাশের রাজনীতিতে এই জিনিস নয়া না; হাঁচা কতার ভাত নাই এইহানে। এমনকি তাইনের বিগ বস্ তারেক বাইয়া লন্ডন থাইক্কা তাইনরে একখান ধমকমার্কা টেলিগেরাম পাঠাইতে পারেন। এইদিকের বিচছুরা অবইশ্য কয়, রুমিনআম্মারে দিয়া বিএনপি নুইচ্চারে এট্টু নাড়া দিছে আর কী। কোনডা যে হাঁচা, আর কোনডা যে মিছা হেইডাই শিখলামনা এই জীবনে।
নোবেল কাক্কু একখান কতা ঠিকই কইছুইন মইত্যার লগে। তাইন কর্মচারীগো ছয়শো কোটি ট্যাহা মাইরা দেওনের কারনে জেলে যাওনের কথা আছিল্; তাইন স্বীকারও করছেন, দ্যাশে হেই সময় ফিরনের কতা আছিল্ না; মাইনে তাইন পলাইছিলেন; সুবিধামতন ফিরছেন। সইত্য কতাখান হইলো, তাইনের যাওনের কতা আছিল্ জেলে, কিন্তুক তিনি গ্যালেন সরকার পরধানের শপথ নিতে। এই কতাখান সইত্য কইছুইন তাইন। ফলটাও কিন্তুক আমরা দ্যাখতে আছি। জেলের আসামী যদি দ্যাশ চালায় তাইলে যা হওনের কতা তাই হইতে আছে। এর লাইগ্যাই ক্ষ্যামতাত বইসাই সব্বাইর আগে নিজের ট্যাহা বাঁচাইয়া লইছুইন তাইন। বাঙ্গালীরে তাইন বোকা ঠাওরাইছুন; এত সোজা না বাপ। জোর কইরা ক্ষ্যামতাত বইলেই কি চোর সাধু অয় নি? অয় না; এইটা নোবেল কাক্কুর জানন থাকা দরকার আছিল্।
আরেকজন সাহসী নারী অইলেন উর্মি আম্মাজান। সরাসরি কাক্কুরে এমন পেঁচগী মাইর দেওনের মতন জননী আইজকাল কমই দেহি। নিজের ক্যারিয়ার ছাইড়া আদর্শের লাইগ্যা এমন জান লড়াইয়া দেওনের মতন মানুষ আমরার এই মরা সুময়ে চক্ষে পড়েনা। শাহ জালাল ভার্সিটির এক বিচ্ছু আমারে কইলো উর্মি আম্মা নাকি আদর্শের প্রশ্নে নিজের জীবনের লগেও আপোষ করেন নাই। হেই কাহিনী এইহানে কইলাম না; তয় হুনছি, তাইন আদর্শের কারনে স্বাধীনতা বিরোধী পাবলিকরে তাইনের জীবনে জা’গা দেন নাই। মনে মনে ভাবি, এদ্দুরা মাইয়া ক্যামতে নুইচ্চারে ধমকখান দিলো! সামনে কতকিছু হওনের চান্স আছিল্; ডিসি, সচিব, আরো কত কী! সব ফেলাইয়া দিলো একাত্তইরের জইন্য, স্বাধীনতার জইন্য! সোজা কইয়া দিলো নুইচ্চারে, আমরার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু; তুই কোন্ হক্কুন আইছো রে? পরিস্কার কতা; সোজা হিসাব, সোজা যুক্তি। হেই সাহসী মাইয়াডারে নুইচ্চার সরকার চাকরী থেইকাতো সরাইলোই, হ্যার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা আর এক হাজার কোটি ট্যাকার মানহানির মামলা দিলো। শ্রমিকের ছ’শো কুটি ট্যাকা যে খাইয়া হ্যালতে হারে, হ্যার আবার মান! বাইচ্চা পোলাপাইনরে বন্দুকের সামনে দিয়া ক্ষ্যামতায় যাওনের “মিটিকুলাস প্যালেন” যে করতে হারে, হ্যার আবার সম্মান। হায়রে নুইচ্চা! আপনে করবেন সংস্কার। এত্তো সোজা! একটা গুঁড়া কিন্তুক সাহসী বাইচ্চারে জবাব দিতে পারলেননা বইলা তার ক্যারিয়ার আর জীবনডা শ্যাষ করার কাম করছেন; তা করেন; তয় মনে রাইখেন, এই দিন দিন না; আরো দিন আছে। সংবিধানের কোন্ ধারায় আপনে ক্ষমতায়? কতাখান্ ভুল কী কইছে ওই তেজী জোয়ান অব আর্ক? সংবিধান মোতাবেক এই দ্যাশ একটা স্বাধীন ভূমি যেইটা স্বাধীন হইছিল্ একাত্তইরে; অথচ আপনে কন্ এইসব পুরান ইতিহাস বাদ দিতে; বঙ্গবন্ধুরে বাদ দিতে। রাষ্ট্রদ্রোহী কি হ্যায় না আপনে? যতই বৈদেশী বন্ধুগো লগে তবলা বাজাননা ক্যান, আপনের গান শ্যাষ অইয়া আইতাছে; এইডা মনে রাইখেন। রেজাকার দিয়া বাংলাদেশ চালান যাইতোনা।
লেখা খান পাঠানের সময় দ্যাখলাম নুচ কাক্কু পিছটান দিছেন। তেনার প্রেস উইং জানাইছে, তাইন রিসেট বাটনে চাপ দেয়ার কথা কইয়া একাইত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের কতা কন নাই; কইছিলেন নাকি দূর্নীতিমুক্ত আর শক্ত প্রতিষ্ঠান গঠন করার কথা। হায়রে নুচ কাক্কু! আপনেরে প্রশ্ন করা হইছিলো স্বাধীনতা যুদ্ধ আর বঙ্গবন্ধুরে নিয়া, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার ভাস্কর্য ভাঙ্গা নিয়া; সেইটার উত্তরে আপনে রিসেটের কতা কইছলান। আপনেরেতো দূর্নীতি, ভাঙ্গা অর্থনীতি, দুর্বল প্রতিষ্ঠান এইসব নিয়া প্রশ্ন করা অয় নাই; তাইলে আপনে এক প্রশ্নের উত্তরে আরেক প্রশ্নের জবাব দিছেন; ঠিক কিনা? আপনে না নোবেল! আসলে ঘটনা তা না। আমার বিচ্ছু ভাইস্তা আবুইল্যা কয়, আপনে এক খান রাজাকারী মার্কা ন্যারেটিভ বাজারে ছাড়ছিলেন দেখনের লাইগ্যা পাবলিক কী কয় হেইডা বুঝতে। বুইঝ্যা ফালাইছেন সময় অহনও অনুকুল না; হের লাইগ্যাই পিছটান দিছেন। আসল বাঙ্গালী মাত্রই বিচ্ছু; হ্যারারে এত বোকা ভাবন ঠিক অয় নাই, কাক্কু।
সইত্য বটে, “কাপুরুষ” শব্দটা পুরুষের জইন্য, নারীর জইন্য নয়।