অভিমন্যু ফয়েজী
আমরার বিচ্ছু ভাতিজা কুদ্দুস কাইল আমারে কইলো আমরার আইন বিষয়ক উজিরে আলা সুবিধাবাদী শাহেনশার বিষয়ে যদি কিছু জানি তবে হেইটা একটু বয়ান কইরতে। এই বিচ্ছুগুলা আবার খালি জ্ঞানী গুনী মাইষের জীবন বিত্তান্ত জাইনতে চায়। পোলাপাইনগুলা সুবিবিধাবাদী সাবের বক্ত আবার। যাই হোক, কুদ্দুইসসা আমারে এক কাপ চা আর একখান সিঙ্গারা খাওয়াইয়া কইলো, কাক্কু, তুমি এট্টু তাইনরে নিয়া আমরারে রেইল লাইনের বেইল দেখাও। আইজ হেই বিষয়ে দুই খান্ কথা কমু যদিও আমার বিদ্যাবুদ্ধি কম; অশিক্ষিতের চাইয়াও এক ডিগ্রী কম। তবুও যা জানি তার কিছু কই আইজ; বাকীটা পরে কমু নে।
আমরার আইনের উজিরে আলা জনাব আসিফ নরজুল সুবিধাবাদী মোসাহেবরে হক্কলে বড়ই এলেমদার পাবলিক কয়। তাইন খুবওই চটপট কইরা ফচফট কথা কন; আর ম্যালা তইথ্য বানাইয়া ফ্যালেন তাইনের শক্ত মাথা দিয়া; এইগুলানরে তাইনের শিষ্যরা আবার সইত্য বইলা মাইনষের কাছে পরমান করে। তাইনও তাঁর গুরু নোবেল কাক্কুর লাহান মাঘের গল্প বৈশাখে করেন; আবার মাঘের সময় বৈশাখ ভাইব্বা রাগ ভৈরবীতে সুর তুলেন কাঁপতে কাঁপতে। বঙ্গবন্ধুরে ভালোবাসেন কইয়া কয় দিন আগেও নাকি চোখের জল ফালাইতেন তাইন; বুজুর্গ মানুষতো; তাই এত ভালোবাসার চোখের জল গামছার মাঝখান দিয়া মুছতে মুছতে পুরান গামছা নয়া বানাইয়া ফ্যালছিলেন, আর পরে হেই গামছা তাইনের মনের ভিতরের আদর্শিক প্রপিতামহ জিন্নাহ সাবের আরেক আদর্শিক নাতি গোলামে বাছুর আর তাইনের দোস্ত- এ-শান্ গোআ পুত্তুর আজমীরে উপহার দিছিলেন নাকি একদিন; যাইক গা, গামছার গল্পও আরেকদিন হইবো নি। আইজ বঙ্গবন্ধুর লাইগ্যা তাইনের ভালোবাসার কতা কই।
বঙ্গবন্ধুর লাইগ্যা হেঁচকি তুলতে তুলতে অতিরিক্ত চোখের জল নয়া গামছায় মুইছতে মুইছতে আইজকাল আমরার আইন বিষয়ক উজিরে আলা জনাব সুবিধাবাদী মহোদয় কওন ধরছেন যে, পন্চাইশ বোছোর আগে বঙ্গবন্ধু ও তাইনের পরিবারের শিশু, গর্ভবতী, ও মহিলাগোর খুনের জইন্য শোক জানাইতে পারতেছেননা, কারন নাকি এই যে, অভ্যুত্থানে মানুষ খুন হইলে বঙ্গবন্ধুর লাইগ্গা শোক করা যাইতোনা; তাঁর বুজুর্গ তইথ্যের মানে কি আমরার মতন আবালেরা বুঝে? মনে অয় তাইনই ঠিক। বঙ্গবন্ধু ক্যাডা? নয়া স্বাধীন দ্যাশে নরজুল সাবেরাই সব। তাইন আর নয়া দ্যাশের জাতির পিতা তাইনের গুরু আমরার নোবেল কাক্কু যা কিছু কন্ সবঅই হাঁচা। আমরার মতন মুখ্যুশুখ্যু মাইনষের বুঝবুদ্ধি আর জ্ঞানগম্যি সবওই থাকে হাঁটুতে।
নরজুল সাবে আমরার জাতীয় কবিরে ভালোবাইসসা তাইনের নামের পাছার সাইডে সেইটারে বসাইয়া দিছেন; কিন্তুক ফালাইয়া দিছেন আসল নামের হ্যাশেরটুক, মানে “ইসলাম”; এইটা নাকি আধুনিকতা; দিতেই পারেন তাইন, তয় আমরার লাহান আবালেরা বুঝি, জনাব সুবিধাবাদীর অনেক তরিকত। তাইনের এইরাম দুই চাইর খান তরিকতের গল্প খইতাম চাই আইজ।
নরজুল সাবেরে বোঝা বড় ভার; তার উপ্রে তাইন আবার বিখ্যাত গড়াগড়ি ইনভার্সিটি থাইক্কা “সুবিধাবাদী” বিষয়ে ডিগ্রীধারী; ইনভার্সিটিটাই একদিক থাইক্কা আরেকদিকে গড়াগড়ির উপ্রে সব থাইক্কা বড় ডিগ্রী দেয়। তাইনের ফলাফল এত ভালো হইছিল্ যে, ওই ইনভার্সিটি তাইনরে “সুবিধাবাদী” খেতাব দিছিল্ ডিস্টিংকশনসহ; অনেকের যেমন আছেনা, মুর্শিদাবাদী, জৈনপুরী, ইত্যাদি; তো তাইনের আছে “সুবিধাবাদী” টাইটেল নামের লগে।
আমরার সুবিধাবাদী সাবে একখান্ বড় তরিকত তাইন দেখাইছিলেন মনে লয় ১৯৮৯ সালে। তাইন মনের ভিত্রের আদর্শিক গুরু ভাই মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীরে নিয়া একখান ল্যাখা ল্যাখছিলেন সাপ্তাহিক বিচিত্রায়। ল্যাখা খানের নাম দিছিলেন, “একজন ধর্মব্যবসায়ীর উত্থান”। সেই ল্যাখায় তাইন সাঈদী সাবের মতন এইরাম বুজুর্গ আদমীরে ধুইয়া হেলছিলেন। তো আইজ তাইন অইন্য ক্যাম্পে। ফেইসবুকে এই ঘটনা নিয়া একখান খাঁটি রইম্য বক্তব্য দিছেন তাইন। তিনি মনে লয় তিনার সেইদিনের কথাগুলান মানেননা। ১৯৮৯ সালে ওই যে সাঈদী সাবেরে ধর্মব্যবসায়ী কইছিলেন হেইটা নাকি আছিল্ “প্রতিবেদন”, মতামত না। “সুবিধাবাদী” সাবের কোন্ টা যে হাঁচা কতা আর কোন্ টা যে মিছা হেইটাই বুঝি নাই কোন কালে। তাইলে কি তাইনের প্রতিবেদন বেঠিক আছিল্? আমরার কিছু কিছু বিচ্ছু আবার বেশী শেয়ান; সুবিধাবাদী সাবের এই গড়াগড়ি দেওনের স্বভাব হ্যারা মানতে নারাজ। হেই সময়ত তাইনের লাইন এক কিসিম আছিল্; নিজেরে নাকি এট্টু উদার বুদ্ধিজীবী দ্যাখানের দরকার আছিল্, কারন দ্যাশে তহন রাজাকারদের বিরুদ্ধে জননী জাহানারা ইমাম একের পর এক ঘটনা ঘটাইতেছিলেন; সুবিধাবাদী সাব হেইকালে তাই এমন কাজকর্ম কইরা জননীর কাছে চইলা গ্যাছিলেন। জননী তাইনরে হেই সময়ের রাজাকার বিরোধী আন্দোলনের অনেক দরকারী কাগজপত্র দিছিলেন; কিন্তুক সেইগুলান দরকারের সময় জননীরে সুবিধাবাদী সাবে আর দ্যান নাই। ঘটনাটা কী আছিল্ আসলে? বিচ্ছুরা কইলো, হেই সময় সুবিধাবাদী সাব দালাল ও রাজাকার এরশাদুল বারীর কাছ থেইক্কা কমনওয়েলথের একখান স্কলারশিপ বাগানের লাইগ্যা বারীর হাতে ঘুষ হিসাবে ওই কাগজগুলা তুইলা দিছিলেন। সুবিঘাবাদী সাব এমন কাম করছেন সেইটা আমার মন মানতে চায়না; তয় বিচ্ছুরাতো আবার অইন্য কিসিম। তারার মত হইলো, এই ঘটনাই উজিরে আলার “সুবিধাবাদী” টাইটেল পাওনের পরথম ধাপ আছিল্।
সুবিধাবাদী হুজুরের গড়াগড়ি দেওনের স্বভাব আরো আছে। তাইন সকালের খবর নাকি বৈকালে উল্টাইয়া দিতে ওস্তাদ কিসিমের মানুষ। যেমন ধরেন, ২০১৯ সনে তাইন নিজের ওস্তাদ নোবেল কাক্কুরে কইছিলেন “মহালোভী”; আমি কিন্তু কথা মিছা কই নাই; অহনো তাইনের ফেসবুকে এই রেকর্ড গড়াগড়ি খাইতে আছে। তবে সুবিধাবাদী শাহেনশা সাব কিন্তু নীতিবাদী মানুষ; জনগনের জইন্যই তাইন জীবন উৎসর্গ করছেন। কেবলমাত্র হেই কারনেই তাইন একদিন যারে “লোভী” কইছিলেন আইজ তাঁর পায়ে চুমা দিতে আপত্তি করেন নাই; এই “লোভী” ওস্তাদের আইনের উজির হইছেন; সবই আল্লাহর ইচ্ছা; আল্লাহ সুবিধাবাদী সাবেরে মন্ত্রী বানাইলে তাইনের কী দোষ? তিনিতো খালি জনগনের সেবা আর আওয়ামী লীগেরে মাইর দ্যাওনের সুযোগ নিছেন; এইটা খুবওই উত্তম কাম। ১৯৭১ সাল হইলে তাইন ইয়াহিয়ার মন্ত্রীসভায়ও যাইতেন; ক্যান যে তখন ছোড আছিলেন! মাঝেমইধ্যে ঘুমের দ্যাশে তাইন ইয়াহিয়ারে স্বপ্নে দ্যাখেন; আহা, কী ফকফকা তাগড়া চেহারা! হইলে হেই মচুয়ার উজির হওন ভালা আছিল্! কী এই শুটকা নোবেল কাক্কুর উজির হইলেন যারে একটা টোকা দিলেও উইড়া যাইবো। যাক, এইরাম চিন্তার কথা তাইন অবইশ্য কাউরে কন নাই; আফটার অল তাইনের সুবিধাবাদী নামতো এ্যামতে অয় নাই।
আরেকখান ঘটনা কইয়াই শ্যাষ করুম উজিরে আলার আরব্য রজনীর গল্প। আগেই কইছলাম তাইন খুব সহজেই বিশ্বাসযোগ্য তথ্য মাথা দিয়া বানাইয়া ফালান। যেমন, তাইন একবার কইলেন, আমরার দ্যাশে ছাব্বিশ লাখ ভারতীয় বেআইনীভাবে কাম করে। কী ভয়ানক কথা! ছাব্বিশ লাখ! ফাইজলামি নাকি? আমার মত নাদান পাবলিকতো কইতেও পারুমনা ছাব্বিশ লাখ লিখতে শুইন্য লাগে কয় পিস্। বিষয়টা আমারে আমার বিচ্ছু ভাতিজা কুদ্দুস বুঝাইয়া দিছলা। যাউক গা, এই জিনিস পাবলিক খাইছিলো খুব। আশা ছিলো, উজিরে আলা আর তাইনের ওস্তাদ নোবেল কাক্কুরে ক্ষ্যামতাত আইনলে তাইনরা এই ছাব্বিশ লাখেরে ঝেঁটাইয়া বিদায় করবেন। ওমা, কিসের কী! উজিরে আলা পুরাই বিষয়টা ভুল মাইরা দিলেন। পাবলিক কইলো, “থাইক, ছাব্বিশ লাখ লাগতোনা; ছাব্বিশ পিস্ বেআইনী ভারতীয় চাকরের নাম দ্যান; আমরা হেগোর খোমা গুলান দেখি।” কী ব্যপার কিছুই বুঝা গেলোনা। সুবিধাবাদী শাহেনশা আমাদেরে এই বিষয়ে পুরাই আন্ধাইরে রাখলেন; জিগাইলেই তাইন মুচকি মুচকি হাসেন; তহন তাঁর হিটলারী মোচ গুলাও য্যান হাসে। একখান্ খাঁটি সুবিধাবাদী হিটলারী মোচ তাইনের।
যাই হউক, এই ঘটনারে সেন্টার কইরা আবাল পাবলিক তাইনের টাইটেল কইরা দিলো “সুবিধাবাদী ছাব্বিশ”।
এইরাম বহুত কিছুই তাঁর রেকর্ডে আছে যেইগুলা সকালে বিকালে পাল্টাইয়া গ্যাছে। যেমন ভারতে ইলিশ সাপ্লাইয়ের ঘটনা। সুবিধাবাদী সাব কয়েক বছর আগে ক্ষেইপ্পা লাল হইয়া পোষ্ট দিছিলেন ভারতে ইলিশ সাপ্লাইয়ের বিরুদ্ধে, কারন ভারত সীমান্তে যখন তখন আমরার পাবলিকরে মারে, অথচ আওয়ামী শয়তানরা শিরক করা ভারতীয়দের পুজায় ইলিশ সাপ্লাই দিছিলো। হেই মানুষ এইবার পুরাই উল্টা। বর্ডারে স্বর্না নামে নিষ্পাপ শিশুটারে হ্যারা গুলি কইরা মারলো, কিন্তু সুবিধাবাদী সাবে হেই দ্যাশে ইলিশ পাঠাইতে আপত্তির কথা কিছুই কইলেননা! ইয়ের লাইগ্যাই কই, বঙ্গদ্যাশের সুবিধাবাদী শাহেনশা খেতাব নরজুল সাবেরেই মানায়। তাইনের পেরেম, পিরীতি, ভালোবাসাও নাকি সুবিধা নির্ভর। এই বিগত আন্দোলনে তাইনে তাঁর পিতৃব্য শ্বশুর জনাব জাফর ইকবালরে “নির্বোধ” কইয়া গাইল পাড়ছিলেন; আগে কুনোদিন এমন অসুবিধাবাদী কাম করেন নাই; এক্ষন করলেন সুবিধা বুইঝা; ফলও পাইলেন। আমার বিচ্ছু ভাতিজা কুদ্দুস কইলো, তাইনের আসল শ্বশুর যাঁরে তাইন হুমায়ুন “ভাই” কইয়া ডাকতেন, তিনি নাকি তাইনরে দ্যাখতে পারতেননা; এইটা হুমায়ুন ভাই লেইখ্যা গেছেন তাঁর বইয়ে। কারনটা নাকি এই যে, উজিরে আলার মইধ্যে “মুই কোন হনুরে” ভাবটা দ্যাখলেই হুমায়ুন ভাই’র চাঁন্দি গরম হইয়া যাইতো। আইজ হুমায়ুন ভাই বাইচ্চা থাকলে তাইনের কপালে কী জুটতো কে জানে?
জনাব সুবিধাবাদী শাহেনশা সাবের গপ আইজকের মত এইখানেই শ্যাষ। তাইন এতই করিৎকর্মা মানুষ যে, এত অল্পে শ্যাষ হয়না। ভবিষ্যতে তাইনের গপ আরো করুন নে। আইজ এইখানেই বিদায় তবে।